আমার খোকার কত যে দোষ সে-সব আমি জানি, লোকের কাছে মানি বা নাই মানি। দুষ্টামি তার পারি কিম্বা নারি থামাতে, ভালোমন্দ বোঝাপড়া তাতে আমাতে। বাহির হতে তুমি তারে যেমনি কর দুষী যত তোমার খুশি, সে বিচারে আমার কী বা হয়। খোকা ব'লেই ভালোবাসি, ভালো ব'লেই নয়। খোকা আমার কতখানি সে কি তোমরা বোঝ। তোমরা শুধু দোষ গুণ তার খোঁজ। আমি তারে শাসন করি বুকেতে বেঁধে, আমি তারে কাঁদাই যে গো আপনি কেঁদে। বিচার করি, শাসন করি, করি তারে দুষী আমার যাহা খুশি। তোমার শাসন আমরা মানি নে গো। শাসন করা তারেই সাজে সোহাগ করে যে গো।
যখন এ দেহ হতে রোগে ও জরায় দিনে দিনে সামর্থ্য ঝরায়, যৌবন এ জীর্ণ নীড় পিছে ফেলে দিয়ে যায় ফাঁকি, কেবল শৈশব থাকে বাকি। বদ্ধ ঘরে কর্মক্ষুব্ধ সংসার--বাহিরে অশক্ত সে শিশুচিত্ত মা খুঁজিয়া ফিরে। বিত্তহারা প্রাণ লুব্ধ হয় বিনা মূল্যে স্নেহের প্রশ্রয় কারো কাছে করিবারে লাভ, যার আবির্ভাব ক্ষীণজীবিতেরে করে দান জীবনের প্রথম সম্মান। "থাকো তুমি' মনে নিয়ে এইটুকু চাওয়া কে তারে জানাতে পারে তার প্রতি নিখিলের দাওয়া শুধু বেঁচে থাকিবার। এ বিস্ময় বারবার আজি আসে প্রাণে প্রাণলক্ষ্মী ধরিত্রীর গভীর আহ্বানে মা দাঁড়ায় এসে যে মা চিরপুরাতন নূতনের বেশে।